আখাউড়ায় খাল দখল করে স্থাপনা নির্মাণ
আখাউড়া-আগরতলা সড়কের পাশের আখাউড়া শহরের ঐতিহ্যবাহী কালন্দি খাল এবং এ খালের কোটি কোটি টাকার ভূ-সম্পত্তি জবরদখলের মহোৎসব চলছে। আখাউড়া পৌর শহরের এই গুরুত্বপূর্ণ কালন্দি খাল দখলের উৎসব যেন থামছেই না। ইতিমধ্যে প্রভাবশালীরা এ খাল ও ভূমি জবরদখল করে সেখানে পাকা ও আধাপাকা স্থাপনা নির্মাণ করে ভাড়া দেয়া শুরু করেছে। অনেকে দখলকৃত সরকারি এ ভূ-সম্পত্তি বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। অপরদিকে শহরের সড়ক বাজারের ঢাকা হোটেলের পাশের এ কালন্দি খালের ওপর ব্রিজের উভয় পাশে ময়লা-আবর্জনা ফেলে স্তূপ করে পানি প্রবাহ স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সড়ক বাজারের একাধিক ব্যবসায়ী জানান, ব্রিজের দু’পাশের আবর্জনার স্তূপ পরিষ্কার না করা হলে প্রভাবশালীরা ব্রিজের দু’মুখ দখল করে স্থাপনা তৈরি করবে অচিরেই। বাজারের ব্যবসায়ীরা ব্রিজের দু’পাশ থেকে আবর্জনার স্তূপ পরিষ্কার করার জন্য একাধিকবার পৌর মেয়র বরাবর লিখিতভাবে জানালেও তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি। অবশ্য পৌর মেয়র তাকজিল খলিফা বলেন, পৌরবাসীর জীবনমান এবং ঐতিহ্য রক্ষার্থে কালন্দি খালের সংস্কার অতীব জরুরি হয়ে পড়েছে। যারা খালের জায়গা দখল করে অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মাণ করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। ব্রিজের দু’পাশের জমাট বাঁধা ময়লার স্তূপ দ্রুততম সময়ে সরিয়ে নিয়ে পানি প্রবাহের প্রতিবন্ধকতা দূর করা হবে বলে তিনি জানান। সরেজমিন রোববার দুপুরে দেখা গেছে, আখাউড়া রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর অফিসের পেছন দিক থেকে উপজেলা প্রশাসন ভবনের সামনে পর্যন্ত তিন শতাধিক স্থাপনা রয়েছে কালন্দি খালের ওপর। খাল দখল হওয়ায় এখন তা ড্রেনে পরিণত হচ্ছে। এ খাল দখলের কারণে শহরের পানি নিষ্কাশন চরম সংকটের মুখে পড়বে বলে মনে করছেন পৌরবাসী। ব্রিজের দু’পাশে আবর্জনা ফেলার কারণে স্থায়ীভাবে পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। উৎকট গন্ধ ছড়াচ্ছে। দখল পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে, পৌর শহরে কালন্দি খাল নামে যে একটি খাল আছে, আগামী প্রজন্ম তা আর জানতে পারবে না। কালন্দি খাল ভরাট দ্রুত বন্ধ করাসহ এ খালের ভূ-সম্পত্তি অনতিবিলম্বে দখলমুক্ত করার জোর দাবি সচেতন মহলের। পৌর এলাকার ভুক্তভোগীরা খাল দখলের বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রশাসনের দায়িত্বশীল ব্যক্তিসহ ভূমি অফিসের সংশ্লিষ্টদের একাধিকবার জানালেও রহস্যজনক কারণে তারা নীরব থাকছেন। যেন দেখার কেউ নেই।
আখাউড়া থানার ওসি মো. মোশারফ হোসেন তরফদার জানান, কালন্দি খাল ভরাট করে সেখানে স্থাপনা নির্মাণকারীদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নির্দেশ পেলে অবশ্যই উচ্ছেদের ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আহসান হাবীব বলেন, সরকারি ভূ-সম্পত্তি দখলে নিয়ে যারা স্থায়ীভাবে জলজট সৃষ্টি করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জানানো হয়েছে।
No comments:
Post a Comment